
আবু সাঈদ খান
বিশিষ্ট সাংবাদিক, কলামিস্ট ও বীর মুক্তিযোদ্ধা আবু সাঈদ খান বলেছেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা আমি দেখি। কোনো টালবাহানা, কোনো যুক্তিতে এটা পিছিয়ে যেতে পারে।
তবে নির্বাচনই সমাধান। জুনের মধ্যে নির্বাচন হতেই হবে।
শনিবার (১২ জুলাই) বেসরকারি টেলিভিশনের এক আলোচনায় এসব কথা বলেন তিনি।
নির্বাচন হতেই হবে- এটা কে বাধ্য করবে? এমন প্রশ্নে আবু সাঈদ খান বলেন, জনাকাঙ্ক্ষা হচ্ছে নির্বাচন।
বৃহত্তর রাজনৈতিক দল বিএনপি ও প্রায় সব দলে নির্বাচন চাইছে। তবে জামায়াত এবং এনসিপি বলছে যে সংস্কার শেষে নির্বাচন। তো আমার কাছে মনে হয়, এটা চাপের আন্দোলন, তারা এটা চাপের জন্য বলছে। অর্থাৎ তারা দাবি দাওয়া আদায়ের ক্ষেত্রে এটা বলছে।
আরেকটা হলো, সরকারের ভেতর যেমন উপদেষ্টারা আগে যেটা বলতেন কেউ কেউ যে সবাই আমাদেরকে চার বছর পাঁচ বছর চাইছে। ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার এই কথাগুলো এখন আর বলছে না। তারপরও তো ঘরের ভেতর ঘর থাকে। সরকারের ভেতর সরকার থাকে। তো ভেতরে এই ধরনের একটা আকাঙ্ক্ষা কাজ করতে পারে যে এই সরকার দীর্ঘায়িত হতে পারে কি না।
আরো সময় ক্ষমতায় থাকতে পারে কি না। এই ধরনের একটা প্রবণতা কারো কারো মধ্যে থাকতে পারে। কিন্তু বাস্তবে সেটা না কিন্তু!
তিনি বলেন, বর্তমানে বিএনপি সরকারকে সহযোগিতা করার পেছনে কারণ হচ্ছে একটা নির্বাচনে যাওয়া। সরকার যেহেতু প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং লন্ডন বৈঠকে হয়ত বা বিএনপির বিশ্বাস জন্মেছে যে এই সরকার নির্বাচন দেওয়ার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। যদিও সরকারের ভেতর অন্য কিংবা প্রশাসনের মধ্যে রাষ্ট্রযন্ত্রের মধ্যে অন্য খেলাও থাকতে পারে এবং সেই খেলা নিয়ে আমি বলছি না। সেই খেলা খুব দুর্বল খেলা হবে। বাস্তবে এটা সম্ভব না। আর নির্বাচন দিলে ভালো নির্বাচন হবে যেহেতু সরকারের কোনো দল নেই।
বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য এবিএম আশরাফ উদ্দিন নিজান বলেন, জুলাই-আগস্টের এই অভ্যুত্থানের পরে আমরা যারা বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখি, একটা রাজনৈতিক বন্দোবস্তের স্বপ্ন দেখি, একটা সুশাসন দেখি, আমরা আমাদের কথা যেন বলতে পারি, আমার ভোট যেন আমি দিতে পারি, আমি যেন বাংলাদেশের একজন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে আমার মনোভাব প্রকাশ করতে পারি- এই যে আমাদের আকাঙ্ক্ষা, এই আকাঙ্ক্ষা নিয়ে কিন্তু বিরোধীদল কথা বলতে হবে। সে কারণে আমি মনে করি, বিএনপি যদি একটা দল হয়, আর বাকি সবাই মিলে একটা জোট করে (শুনতেছি জোট করবে), সত্যিকার একটা জোট করে, আর বিএনপির সঙ্গে যদি ফাইট করতে পারে এবং মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার একটা সরকার এবং বিরোধীদল হয়, তখনই আমি মনে করি আওয়ামী লীগকে যে ব্যান অফিশিয়ালি করেন, আর আনঅফিশিয়ালি করেন- ফাইনালি কী চাচ্ছি, এই ফ্যাসিজম যেন আমাদের দেশে না আসে। আওয়ামী লীগ একটা পরীক্ষিত ফ্যাসিস্ট। পরীক্ষিত ডিক্টেটর। ওরা না আসতে পারবে তখনই, যখনই আমাদের সুশাসন এবং মানুষের মনের কথা বলার জন্য সত্যিকার একটা বিরোধী দল থাকবে।
জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত: ১৩ জুলাই, ২০২৫